ফ্যাটি লিভার রোগ বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম সাধারণ লিভারজনিত সমস্যা হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক খাদ্যাভ্যাস ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই এর মূল কারণ।
লিভার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বর্তমানে দুটি ধরণের ফ্যাটি লিভার বেশি দেখা যায়— অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (AFLD) এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (NAFLD)। বিশেষ করে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে, যা মূলত অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়ার ফল।
সম্প্রতি মার্কিন থাইরয়েড ও PCOS বিশেষজ্ঞ ডঃ অ্যাড্রিয়ান সজনাজদার ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, লিভারের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক উপাদান হলো উচ্চ ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ (High Fructose Corn Syrup – HFCS)।
স্যাচুরেটেড ফ্যাট নয়, আসল অপরাধী ‘হাই ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ’
ডঃ অ্যাড্রিয়ান বলেন, অনেকেই মনে করেন স্যাচুরেটেড ফ্যাট যেমন ফ্রাই, বার্গার বা ঘি লিভারের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর। কিন্তু বাস্তবে তার চেয়েও বেশি ক্ষতিকর হলো HFCS, যা গ্লুকোজের তুলনায় অনেক দ্রুত লিভারে চর্বিতে রূপান্তরিত হয়।
এই সিরাপটি সাধারণত কুকিজ, ক্যান্ডি, কোমল পানীয়, প্যাকেটজাত জুস, সস ও বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবারে ব্যবহৃত হয়। নিয়মিত এসব খাবার খেলে লিভারে চর্বি জমে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি দ্রুত বাড়ে।
কেন বিপজ্জনক HFCS?
ফ্রুক্টোজ স্বাভাবিকভাবে ফল ও সবজিতে থাকে, যা শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু শিল্প উৎপাদিত ফ্রুক্টোজ (HFCS) লিভারের জন্য বিষের মতো কাজ করে। এটি লিভারে প্রক্রিয়াজাত হয়ে অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট করে, পুষ্টি ও চর্বির শোষণ বাড়ায় এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি করে। ফলে ধীরে ধীরে লিভারের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
করণীয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্যাটি লিভার থেকে বাঁচতে হলে—
প্রক্রিয়াজাত খাবার ও কোমল পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে
ঘরে তৈরি খাবার খেতে হবে
পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে
নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে
ডঃ অ্যাড্রিয়ান সজনাজদার বলেন, “লিভার আমাদের শরীরের পরিশোধনাগার। এটিকে রক্ষা করতে হলে আমাদের খাদ্যাভ্যাসই সবচেয়ে বড় ওষুধ।”
